Showing posts with label মেধা সম্পদ. Show all posts
Showing posts with label মেধা সম্পদ. Show all posts

Friday, February 3, 2012

মেধা সম্পদ


মেধা সম্পদ কি?
মানুষের ভাবনাজাত সৃষ্টিই মেধা সম্পদ। যেমনঃ উদ্ভাবন, সাহিত্য ও শৈল্পিক কর্ম এবং ব্যবসায়ে ব্যবহৃত প্রতীক, নাম ও ইমেজ বা ছবি।
মেধা সম্পদ দু’টি শাখায় বিভক্তঃ
১. ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি (শিল্প সম্পদ)ঃ  ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি’র মধ্যে রয়েছে পেটেন্ট, ট্রেডমার্ক, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন (শিল্প নকশা) এবং ভৌগলিক পরিচিতি (Geographical Indication)

২. কপিরাইটঃ কপিরাইট-এর অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে উপন্যাস, কবিতা ও নাটক, চলচ্চিত্র, সঙ্গীতসহ সাহিত্যকর্ম এবং ড্রয়িং, পেইন্টিং, আলকচিত্র, ভাস্কর্য এবং স্থাপত্য নকশাসহ নান্দনিক কর্ম। কপিরাইট সংশ্লিষ্ট অধিকারের মধ্যে রয়েছে শিল্পীদের (পারফর্মার) অধিকার, ফনোগ্রাম প্রযোজকদের অধিকার, রেডিও ও টেলিভিশন অনুষ্ঠান সম্প্রচার সংস্থার অধিকার।

মেধা সম্পদ অধিকার কোনগুলো?
মেধা সম্পদ অধিকার অন্য যে কোনো সম্পদ অধিকারের মত -  এই অধিকার পেটেন্ট, ট্রেডমার্ক বা কপিরাইট স্বত্বাধিকারীকে  তার কাজ বা বিনিয়োগ থেকে লাভবান হওয়ার সুবিধা প্রদান করে। মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার ২৭নং অনুচ্ছেদে এসব অধিকারের উল্লেখ রয়েছে। এ ধারায় কোনো বৈজ্ঞানিক, সাহিত্য বা নান্দনিক সৃষ্ঠির মালিকানা থেকে প্রাপ্ত সুফল ভোগের অধিকারের বিষয়টি  ঘোষিত হয়েছে।

 মেধা সম্পদের গ্রুরুত্বের বিষয়টি প্রথম স্বীকৃত হয় ১৮৮৩ সালে অনুষ্ঠিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি সুরক্ষার প্যারিস সম্মেলন (প্যারিস কনভেনশন ফর দি প্রটেকশন অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোপার্টি) এবং ১৮৮৬ সালে অনুষ্ঠিত সাহিত্য শৈল্পিক কর্ম সুরক্ষার বার্ন সম্মেলন (Berne Convention for the Protection of Literary and Artistic Works)উভয় চুক্তিই পরিচালনা করছে বিশ্ব মেধা সম্পদ সংস্থা বা World Intellectual Property Organization (WIPO)

কেন মেধা সম্পদ প্রসার ও সংরক্ষণ করবেন?
মেধা সম্পদ প্রসার ও সংরক্ষণের কতগুলো যৌক্তিক কারণ রয়েছে।
প্রথমত, মানবজাতির অগ্রগতি ও কল্যাণ নির্ভর করে প্রযুক্তি ও সাংস্কৃতিক জগতে নতুন কিছু সৃষ্ঠির ক্ষমতার উপর।

দ্বিতীয়ত, এ জাতীয় নতুন সৃষ্ঠিকর্ম গুলোর আইনি সুরক্ষা এ খাতে অতিরিক্ত সম্পদ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে, যা আরো নতুন নতুন সৃষ্ঠিকর্মের সম্ভাবনা তৈরী করে।

তৃতীয়ত, মেধা সম্পদের প্রসার ও সংরক্ষণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে, নতুন চাকুরীর সুযোগ সৃষ্টি ও শিল্প প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে এবং জীবন-যাপনের মান বৃদ্ধি করে

সামাজিক-সাংস্কৃতিক কল্যাণও অর্থনৈতিক উন্নয়নের শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে মেধা সম্পদের সম্ভাবনা উপলব্ধিতে একটি কার্‍্যকর ও ন্যায়সঙ্গত মেধা সম্পদ ব্যবস্থা বিশ্বের সবগুলো দেশকে সহায়তা করতে পারে। এই ব্যবস্থা উদ্ভাবকের স্বার্থ ও জনস্বার্থের মধ্যে একটি চমৎকার ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে, এমন এক পরিবেশ সৃষ্ঠি করে যেখানে সবার মঙ্গলের জন্য সৃষ্টিশীলতা ও উদ্ভাবন বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়।

গড়পড়তা মানুষ কিভাবে লাভবান হতে পারে?

মেধা সম্পদ অধিকার পুরষ্কৃত করে সৃষ্টিশীলতা ও মানব প্রচেষ্টাকে, সভ্যতার অগ্রগতির ক্ষেত্রে যেটা প্রধান প্রণোদনা হিসেবে কাজ করে। কয়েকটি উদাহরণ হচ্ছেঃ

*     বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের চলচ্চিত্র, রেকর্ডিং, প্রকাশনা ও সফটওয়্যার শিল্প বিশ্বের সব প্রান্তের শত কোটি মানুষের মনে যে বিনোদন জোগায় তার অস্তিত্বই থাকত না, যদি কপিরাইট সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকত।

*     ভোক্তারা কোনো ভাবেই আস্থার সঙ্গে পণ্য বা সেবা কিনতে সক্ষম হত না, যদি নকল বা পাইরেসি নিরুৎসাহে নির্ভরযোগ্য ও আন্তর্জাতিক ট্রেডমার্ক সুরক্ষা আইন এবং কার্যকরীকরণ ব্যবস্থা না থাকত।

*     পেটেন্ট ব্যবস্থা প্রদত্ত পুরষ্কারের সুবিধা না থাকলে গবেষক এবং উদ্ভাবকরা ভোক্তাদের জন্য উন্নত ও কার্যকর পণ্য উৎপাদনে তেমন উৎসাহবোধ করতেন না।